Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ক্যাম্পস এর বিশ্ব কিডনি দিবস ২০২৩ উদযাপন স্বাস্থ্যসেবা

ক্যাম্পস এর বিশ্ব  কিডনি দিবস ২০২৩  উদযাপন

যথাযোগ্য  মর্যাদা  ও  গুরুত্বের  সাথে বিশ্ব  কিডনি দিবস-২০২৩  উদযাপন করেছে  শীর্ষস্থানীয় কিডনি বিষয়ক বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)।

দিবসটি  উদযাপন  উপলক্ষ্যে  সংস্থাটি  বৃহস্পতিবার  দিনব্যাপি  নানাবিধ  কর্মসূচী  পালন  করে।  কর্মসূচী সমূহের মধ্যে সংস্থাটির প্রধান  কার্যালয় ঢাকাস্থ  মোহাম্মদপুর এর  নবোদয়  আবাসিক  এলাকায়  বর্ণাঢ্য  র‌্যালি,  স্বল্প  মূল্যে  কিডনি  স্ক্রিনিং  কর্মসূচী, পথচারীদের মধ্যে টি-শার্ট বিতরণ, পরবর্তীতে ধানমন্ডি আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যৌথ র‌্যালির আয়োজন করে।

বিশ্ব  কিডনি  দিবস-২০২৩  এর  প্রতিপাদ্যের  আলোকেই  ক্যাম্পস  তার  এ  বছরের  সমস্ত  আয়োজন  সাজিয়েছে।  

র‌্যালি  শেষে ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম এ সামাদ বলেন, কিডনি রোগী দুর্যোগের সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। আমরা জানি কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। সারা বিশ্বে ৮৫ কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে ২ কোটিরও অধিক কিডনি রোগী। প্রতি বছর ৩৫ থেকে ৪০ হাজার লোক কিডনি সম্পূর্ণ বিকলের শিকার বাংলাদেশে। আরও ১৫ থেকে ২০ হাজার আকস্মিক কিডনি বিকল হয়। এদের বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন প্রয়োজন হয়। কিডনি বিকলের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল  বিধায় শতকরা ১০ জন এর ব্যয় সংকুলান করতে পারে। চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেক পরিবার আর্থিকভাবে নিংস্ব হয়ে যায়। সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন বীমার আওতায় আনতে হবে।দুর্যোগের সময় কিডনি বিকল রোগীদের বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আমরা জানি কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গেলে বেঁচে থাকার জন্য  প্রয়োজন  ডায়ালাইসিস  ও  কিডনি  সংযোজন।  ডায়ালাইসিস  সাধারণত  সপ্তাহে  ২-৩  দিন  করতে  হয়।  তাই  কিডনি রোগীদেরকে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে ডায়ালাইসিস এর ব্যবস্থা করতে হবে। দুর্যোগের কারণে ডায়ালাইসিস বন্ধ হলে মৃত্যু এগিয়ে আসবে। কিডনি সংযোজনের রোগীদের নিয়মিত ঔষধ খেতে হবে, ঔষধ নিয়মিত না খেলে সংযোজিত কিডনি বাতিল হয়ে যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, সুস্থ জীবন ধারার প্রধান সোপান গুলো হলো অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম ও কায়িক পরিশ্রম করা, পরিমিত স্বাস্থ্যসম্মত বা সুষম খাবার গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান পরিহার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করা, তীব্র মাথা ব্যাথার ঔষধ পরিহার করা। তাছাড়া যারা ঝুঁকিতে আছেন যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বেশী, বংশে কিডনি রোগ আছে, যারা ধূমপায়ী, যারা তীবু মাত্রার ব্যাথার ঔষধ খেয়েছেন, যাদের পূর্বে কোন কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের বছরে অন্তত ২ বার প্রস্রাব ও রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ। কেননা প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ সনাক্ত করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ক্যাম্পস  এর  সাধারণ  সম্পাদক  অধ্যাপক  ডাঃ হারিসুল  হক  বলেন  বলেন,  কিডনি  রোগ  ভয়াবহ বটে,  তবে জনগণের  মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এ রোগের প্রকোপ কমিয়ে রাখার লক্ষ্য নিয়েই ক্যাম্পস তার কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।

এই  পথ  র‌্যালিতে  আরো উপস্থিত  ছিলেন,  অধ্যাপক  ডাঃ হাবিবুজ্জামান,  উপাধ্যক্ষ,  আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ, অধ্যাপক ডাঃ আব্দুস ছালাম আরিফ, বিভাগীয় প্রধান, সার্জারি বিভাগ, ডাঃ আজফার উদ্দিন শেখ, সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজি বিভাগ, ডাঃ মোঃ সোয়েব সারওয়ার মুরাদ, সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিক এন্ড ট্রমাটোলজি বিভাগ এর চিকিৎসক সহ অন্যান্য চিকিৎসকবৃন্দ ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

কিডনি রোগের সুলভে চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ক্যাম্পস ইতিমধ্যে ঢাকার পাশাপাশি মাদারীপুর, চাঁদপুর, টাঙ্গাইল, সখিপুর ও নবাবগঞ্জ শহরে কিডনি সেবা কেন্দ্র ও ডায়ালাইসিস কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এ সব কেন্দ্র সমূহের পক্ষ থেকেও নিজ নিজ জেলা ও থানা শহরে বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে র‌্যালি ও বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এই বিভাগের অন্যান্য খবর