Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সফল উদ্যোক্তা সৈয়দপুরের গ্রামের আকতার হোসেন নীলফামারী

নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সফল উদ্যোক্তা সৈয়দপুরের গ্রামের আকতার হোসেন

করতেন লোভনীয় বেতনে আকর্ষণীয় চাকরি। সেই চাকরি ছেড়ে এলাকার মানুষের জন্য কিছু করার একটা উদ্যোগ নিলেন। নকল ও ভেজালের ভিড়ে মানুষ প্রকৃত জিনিসটি সঠিক দামে পৌঁছানোর ব্রতে যোগ দিলেন কৃষি, মাছ ও মুরগি খামারে। তিনি হলেন আকতার হোসেন। নিজস্ব পৈতৃক জমিতে এসব করে লাভবান ও সফল তিনি। নাম ছড়িয়ে পড়েছে সৈয়দপুর ছাড়াও বাইরের জেলাগুলোতেও। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রীন গ্লোবাল এগ্রো লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। বাড়ির পাশে সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে পৈতৃক জমিতে ব্রি-২৯, ব্রি-৩৪, চিনগুড়াসহ মৌসুমী ধানের আবাদ করেন। সেই ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর নিজস্ব চাতালে শুকান ও ধান বাছাই প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় মিলে ভাঙ্গান। এ থেকে ধানের বীজ ও চিনিগুড়া চাল তৈরি করে প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করছেন। তাঁর ধানের বীজ ও চিনিগুড়া চালের কদর বেড়েই চলেছে সর্বত্র।

এই চাল কেন আলাদা তা হলো : গুণগত মানসম্পন্ন বীজ (উৎস ব্রী) হতে নিজস্ব ও আওতাভূক্ত চাষি দ্বারা উৎপাদিত। অভিজ্ঞ কৃষিবিদগণের নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্য বীজ ও চালের গুনগত মান নিশ্চিত করা হয়। সনাতন পদ্ধতিতে ঝাড়াই ও বাছাইকৃত। চাল পরিস্কার ও সাদা করার জন্য ইউরিয়া যুক্ত করা হয়না চাল সংরক্ষণকালীন সময় কোনো প্রকার ফিউমিগেশন বা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। চালে সুগন্ধি তৈরির জন্য কোনো প্রকার কৃত্রিম রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত করা হয় না। ফলে চালে প্রাকৃতিক সুগন্ধ অটুট থাকে। পলিশ বা কৃত্রিম ফ্লেভার মুক্ত হওয়ায় প্রাকৃতিক স্বাদ ও সঠিক মানের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। 

প্রায় সাড়ে ৮ একর জমিতে কয়েকটি বড় বড় পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি। সেখানে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প প্রভূতি জাতের মাছ চাষ করছেন। কৃত্রিমতা ছাড়াই মাছ বড় করছেন পুকুরে। তাঁর মাছের খামারের বৈশিষ্ট হচ্ছে: গুণগত মানসম্পন্ন ফিড ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও খৈল, রাইস ব্রান ও মোলাসেস বাড়তি খাবার হিসাবে নিয়মিত দেয়া হয়। তাই পুকুরে মাছের মুল খাবারের সাথে প্রাকৃতিক খাবারের মজুদও থাকে পর্যাপ্ত। মাছ তাড়াতাড়ি বড় করার জন্য কোনো প্রকার কেমিক্যাল/ গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করা হয় না। তাই নিরাপদ হিসাবে মাছ স্বাদ ও গুণাগুন সম্পন্ন। কোনো রেসিডুয়াল ইফেক্ট নেই। সঠিক ওজনের নিশ্চয়তা। একই কায়দায় গড়ে তুলেছেন মুরগির খামার। তাঁর মুরগির খামারের বৈশিষ্ট হচ্ছে : গুণগত মানসম্পন্ন ফিড ব্যবহৃত হয়। ন্যূনতম এন্টিবায়েটিক ব্যবহৃত হয়। কোনো রেসিডুয়াল ইফেক্ট নেই। দোকানে মুরগি বিক্রির আগমুহূর্ত পর্যন্ত ঠেসে ঠেসে মুরগিকে খাওয়ানো হয় ওজন বাড়ানোর জন্য, কিন্ত এখানে তা করা হয় না।

আলাপকালে আকতার হোসেন জানান, সামাজিক দায়বদ্ধ থেকে ইস্পাহানীর লোভনীয় চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্ত হয়েছি। মানুষকে ভালো কিছু উপহার দেওয়ার জন্য কৃষি, ধান, চাল ও মাছ চাষের মতো ব্যবসা করছি। এতে স্বাধীনতা রয়েছে। আমার কাজ দেখে এলাকার মানুষ অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। শিক্ষিত চাষির কাজে অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন এলাকার মানুষ। ফলে অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনায় কাজ করছেন আকতার হোসেন।