Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল সংগ্রহে স্থানীয় সরকার কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি জাতীয়

আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল সংগ্রহে স্থানীয় সরকার কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি

সম্প্রতি রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘ট্রেনিং ফর লোকাল লেভেল অ্যাকটরস অন ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট প্রোপোজাল ডেভেলপমেন্ট ফর অ্যাকসেসিং ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট ফান্ডস’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। জিআইজেড বাংলাদেশ এর ইম্প্রুভড কোঅর্ডিনেশন অফ ইনটারন্যাশনাল ক্লাইমেট ফাইন্যান্স (আইসিআইসিএফ) প্রজেক্ট  এর সহায়তায় কর্মসূচীটি আয়োজন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। 

বাংলাদেশ সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত উন্নয়ন অর্জনসমূহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স (সিআরআই) ২০২০ অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। তাই, দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ ও যুক্তরাজ্যের ই কো. লিমিটেড যৌথভাবে প্রশিক্ষণটি প্রণয়ন ও পরিচালনা করেছে। এই প্রক্রিয়ায় মতামত প্রদান করে জিআইজেড, ইআরডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সহ অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থা।

বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব লোকাল গভর্নমেন্ট (এনআইএলজি), বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ মিউনিসিপল ডেভেলপমেণ্ট ফান্ড এঁর ত্রিশজন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ সেশনে অংশ নেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালাটিতে আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন সংগ্রহের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির বিভিন্ন পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন ও প্রশমনের সম্ভাবনা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলে আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব এবং জাতিসংঘ অধিশাখার প্রধান কবির আহামদ বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনে খুব কম ভূমিকা থাকলেও এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। প্রতি বছর আমাদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজনের বিষয়টি যাতে বিবেচনা করা হয়। সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তহবিল রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট অবগত নই দেখে এঁর সদ্ব্যবহার করতে পারি না। এগুলো সম্পর্কে সকলকে জানানোর জন্য একটি ক্লাইমেট সেল স্থাপন,  প্রশিক্ষন উপকরণ সহ ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

জিআইজেড বাংলাদেশ’র অ্যাডাপ্টেশন অফ আরবান এরিয়াস টু ক্লাইমেট চেঞ্জ এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. ডানা দে লা ফন্টেইন বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে আমরা কতটুকু খাপ খাওয়াতে পারছি তার ওপর এই দেশের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে। সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন টেকসই আর্থিক সমাধান। এই লক্ষ্যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জার্মানি বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।”

জিআইজেড বাংলাদেশের আইসিআইএফ প্রকল্পের প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজার ড. ফেরদৌস আরা হোসেন বলেন, “আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলগুলোর কাছে উচ্চমানের প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রদানের পাশাপাশি অর্থায়নের সুযোগ ও তাদের শর্তাবলি বোঝার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এই প্রশিক্ষণে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে উন্নত মানের প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করছি। এই প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান অংশগ্রহণকারীদের বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে সহায়তা করবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।”