Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

সৈয়দপুরে ট্রেন ট্র্যাজেডির গণহত্যা দিবস পালিত নীলফামারী

সৈয়দপুরে ট্রেন ট্র্যাজেডির গণহত্যা দিবস পালিত

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গোলাহাট গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। গণহত্যার ৫১ বছর উপলক্ষে সোমবার (১৩ জুন) শহরের উপকণ্ঠে গোলাহাট বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে' আমরা একাত্তর' সংগঠনের উদ্যোগে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, চারা রোপন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এতে ১৯৭১ সালে বধ্যভূমিতে ট্রেন থামিয়ে ৪৪৮ জন মাড়োয়ারিকে নৃশংস গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে "আমরা একাত্তর'।

১৯৭১ সালের ১৩ জুন সকাল ১০টার দিকে সৈয়দপুরে হিন্দু মাড়োয়ারিদের ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে শহরের অদূরে গোলাহাট বধ্যভূমিতে ট্রেন থামিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকান্ড চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। শহীদ স্বজনদের বক্তব্যে এসব তথ্য উঠে আসে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমরা একাত্তরের কেন্দ্রীয় নেতা ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আমরা একাত্তরের কেন্দ্রীয় সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী, আবুল কালাম আজাদ, কানিজ রহমান, মীর সানোয়ার, নিয়ামত আলী খোকন, এনামুল আজিজ রুমী ও রেজাউর রহমান রেজু। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও শহীদ পরিবারের সন্তান মহসিনুল হক মহসিন, পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু। 

এতে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আমরা একাত্তরের স্থানীয় প্রতিনিধি ও পৌর দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোস্তাফিজুর রহমান সরকার মুন্না।

সভার শুরুতেই শহীদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে আমরা একাত্তরের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার অদম্য স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে গণহত্যার শিকার অগনিত বাঙালি রেলকর্মীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে এদিন সৈয়দপুর শহরের বসবাসরত সংখ্যালঘু হিন্দু ও মাড়োয়ারীদের নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো করা হয়। এরপর সবাইকে তোলা হয় একটি বিশেষ ট্রেনে। পরে ট্রেনটি শহরের উপকণ্ঠে গোলাহাট এলাকায় নিয়ে গিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়। এখানে হানাদার পাক বাহিনীর ও তাদের এদেশীয় দোসর অবাঙ্গালিরা ট্রেন থেকে নামিয়ে একে একে ৪৪৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বর্বর হত্যাযজ্ঞের স্থানটি সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। আর সেই থেকে ১৩ জুন মুক্তিযুদ্ধকালীন সৈয়দপুরের গোলাহাট গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।