Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

দীঘিনালায় চা দোকানীর বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার, আটক ৪ খাগড়াছড়ি

দীঘিনালায় চা দোকানীর বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার, আটক ৪

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলায় এক চা দোকানীর মরদেহ ও জাহাঙ্গীর আলম নামে একজনের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত জাহাঙ্গীর আলম (৫০) উপজেলার পূর্ব হাজাছড়া গ্রামের মৃত সফি উল্লাহর ছেলে। শুক্রবার (১০ জুন) রাত ৯টার সময় উপজেলার পুর্ব হাজাছড়া গ্রামের পারঋেৎ (৩২) এর বাড়ি থেকে গোবর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় তার মাথা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় পারভেজসহ সন্দেহভাজন আরো তিনজন আটক করা হয়েছে। এর আগে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) মধ্যরাতে জাহাঙ্গীর আলমকে (৫০) মাথা আলাদা করে হত্যা করা হয়। পরে সে মাথা পারভেজের নিজ বাড়ি থেকে তার দেয়া তথ্য মতে গোবর দিয়ে ঢেকে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১০ জুন) সকালে হাজাছড়া যাওয়ার পথে জাহাঙ্গীর আলম দুলালের ডোবার পাড়ে নিহতের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করেন। এসময় তার সাথে আলু, ডাল, বিস্কুট ইত্যাদি বাজার সদাই হাতে ছিল। এঘটনার প্রায় ১১ঘন্টা পর নিহতের মাথা স্থানীয় পারভেজের বাড়ি থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এঘটনায় সন্দেহভাজন আরো তিন জনকে আটক করা হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও জাহাঙ্গীর আলমের মাথা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা অনেকেই জানান, বাজার থেকে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পারভেজ নামে ধৃত ব্যক্তি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে। পরে তাকে নিয়ে তার জাহাঙ্গীর আলমের মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খাগড়াছড়ি সদর সার্কেল জিনিয়া চাকমা এবং দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম পেয়ার আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহতের মাথা উদ্ধার করার জন্যে পুকুরে জাল টানা হয়েছে। কিন্তুু মাথা খুজে পাওয়া যায়নি।

নিহতের স্ত্রী খাদিজা বিবি (৩৫) জানান, তার স্বামী উদ্দীনের দোকানে কারিগর হিসেবে চাকরি করতো। সেখানে বেতন বাড়ানো নিয়ে দু’জনের সাথে ঝগড়া হয়। পরে সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ৯ মাস আগে নতুন করে নিজেই দোকান দেয়।

নিহতের শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার মেয়ে জামাই জাহাঙ্গীর আলম খুবই সহজ সরল মানুষ। কেনই বা তাকে নির্মমভাবে খুন করা হলো জানিনা।

নিহত জাহাঙ্গীর আলম (৫০) পূর্ব হাজাছড়া গ্রামের প্রয়াত সফি উল্লাহর ছেলে। তিনি মেরুং বাজারে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান পরিচালনা করতেন। তার ছোটো ছোটো তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ছাড়াও সাদিয়া আক্তার (১১) ফাহিমা আক্তার (৬) এবং মহিমা আক্তার (১) তিন কন্যা সন্তান রয়েছে।

অবশেষে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে ধৃত পারভেজের স্বীকারোক্তিতে রাত সোয়া ৮টার দিকে গোবরের নিচে লুকানো অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম মস্তকটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মেরুং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের মাথা এখনো উদ্ধারে শত চেষ্টা করার ফলে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের মাথা উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে.এম পেয়ার আহমেদ মাধা উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে ধৃত পারভেজের স্বীকারোক্তিতে তার বাড়ি পাশে গোবরের নিচে লুকানো অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম মাথাটি উদ্ধার করা হয়। জাহাঙ্গীর আলম খুন হওয়ার ঘটনায় পারভেজের বাড়ি থেকে গোবর দিয়ে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় পারভেজসহ আরো তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে অপারকতা প্রকাশ করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

ওসি এ.কে.এম পেয়ার আহম্মেদ আরো জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট শেষে দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি জোলার দীঘিনালায় মস্তক বিহীন অবস্থায় এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের নাম জাহাঙ্গীর আলম (৫০)। তিনি মৃত সফি উল্লাহর ছেলে। তার বাড়ি দীঘিনালা উপজেলার পূর্ব হাজাছড়া গ্রাম। দীঘিনালা উপজেলায় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মাথা বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া এলাকার গ্রামীণ সড়ক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। গতরাতে দোকান বন্ধ করার পর তিনি বাসায় ফেরেননি। তার মুঠোফোনে বেশ ক’বার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ভোরে প্রতিবেশীরা মেরুং বাজার সংলগ্ন পুকুরের পাশে গ্রাামীণ সড়কের ওপর তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি নিয়ে যায়।