Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও বলাৎকারের অভিযোগে ৩ জনের যাবজ্জীবন খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও বলাৎকারের অভিযোগে ৩ জনের যাবজ্জীবন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে পৃথকভাবে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুই জন এবং বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষকের যাবজ্জীবন দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত।

মাটিরাঙ্গা উপজেলায় তাসলিমা আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরীকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষনের অভিযোগে মো: রেজাউল করিম (৩৭) ও মো: সাবু মিয়া (৩৫) নামে দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন বিচারীক আদালত। একই সাথে উভয়কে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুছাং আবু তাহের এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত মো: রেজাউল হাওলাদার (৩৭) মাটিরাঙ্গার কাঠাল বাগান এলাকার হানিফ হাওলাদারের ছেলে এবং মো: সাবু মিয়া (৩৫) একই এলাকার মৃত: জামাল মিয়ার ছেলে।

মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল মাটিরাঙ্গার মুসলিমপাড়া এলাকায় মো: সাবু মিয়ার বাগান বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিম তাসলিমা আক্তারকে হাত মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এঘটনায় লজ্জায় অপমানে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে তাসলিমা আক্তার। দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।

এই ঘটনায় একই বছরের ১৭ নভেম্বর মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন ভিকটিম তাসলিমা আক্তারের বাবা মো: ইয়াছিন।

তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারী মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলা চলাকালীন মোট ৫জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। যুক্ত তর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন। আসামীদেরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি ভিকটিমের পবিারকে উভয়কে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।

মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিধান কানুনগো বলেন, এ রায় সমাজের মানুষের কাছে স্বরণীয় হয়ে থাকবে। এদিকে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মো: আলী নুর।

খাগড়াছড়ির মাদ্রাসায় দশ বছরের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো: নোমান মিয়া ওরফে রোমান (২২)-কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন বিচারীক আদালত। একই সাথে ভিকটিমের পরিবারকে ৩০লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়। বুধবার (২৩ মার্চ ২০২২) দুপুরে খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুছাং আবু তাহের এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত নোমান দীঘিনালার ছোট মেরুং এলাকার মো: আলী মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭সালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ছোট মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদ্রাসায় হাফেজ মো: নোমান মিয়া ওরফে রোমান (২২) একই মাদ্রাসার ছাত্র (১০)-কে বলাৎকার করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার একই বছরের ২৩শে আগষ্ট দীঘিনালা থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়ের পর ২০১৮ সালের ২২ মে চার্জ গঠন করা হয়। মামলা চলাকালীন মোট ১২ জন স্বাক্ষ্য প্রদান, যুক্ত তর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় প্রদান করেন।

আসামীকে সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি ভিকটিমের পবিারকে ৩০লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ারও নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইজীবি এডভোকেট বিধান কানুনগো সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, এমন রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন।