Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

এ যেন খাচার ভিতর অচিন পাখি

রাজবাড়ীতে ১১ বছরের শিশুর খাচাবন্দি নয়টি বছর রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে ১১ বছরের শিশুর খাচাবন্দি নয়টি বছর

রাজবাড়ীতে নয় বছর যাবৎ খাচায় বন্দি জীবন কাটাচ্ছে এক শিশু। বাক ও শারিরিক প্রতিবন্দি ওই শিশুটির পরিবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে আজ সর্বশান্ত। শিশুরটির বয়স ১১ বছর হলেও ৯ বছর যাবৎ রয়েছে খাচার মধ্যে বন্দি। এখন সরকারসহ বৃত্তবানদের এগিয়ে আশার আহব্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী। যদিও চিকিৎসাসহ সব ধরনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানান, রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ি ইউনিয়নের পুর্ব ফুল কাউন গ্রামের বাসিন্দা মদন কুমার দাস ও চন্দনা রানী দপ্ততির কোল আলোকিত করে ২০১০ সালের মার্চ মাসে জন্ম গ্রহন করে ফুটফুটে শিশু শিখা রানী দাস। জন্মের এক বছর পরই মা বাবা বুঝতে পারেন শিশুটি প্রতিবন্দি। এরপর থেকে তাকে যে কেউ কোলে নিলে কামরে দেয়। সেই সাথে হামাগুরি দিয়ে চলে যায় অন্যত্র, যে কারনে প্রথমে শিকল দিয়ে বেধে ও পরে খাচাবন্দি করে রাখা শুরু করে পরিবারটি। শিশুটির চিকিৎসা করাতে জমানো টাকা ও জমি বিক্রি করে ভারতে নিয়ে গেলেও তাতেও হয়নি কোন লাভ। এখন প্রতিদিন ১৫০ টাকার ঔষুধ লাগে তার। যে কারনে তাকে নিয়ে চিন্তিত হত দরিদ্র পরিবারটি।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু শিখা রানী দাসের বাবা মদন কুমার দান বলেন, শিশুটিকে নিয়ে আমাদের দুঃখের অন্ত নেই। দরিদ্রতার কারনে আমার সংসার চালানোই কষ্টসাধ্য। তার উপর এর চিকিৎসা করতে বেগ পেতে হচ্ছে । সরকারসহ বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহব্বান জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, সরকারীভাবে বাক ও শারিরিক প্রতিবন্দি শিশু শিখা রানী দাসকে একটি প্রতিবন্দি কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। এতেও স্থানীয় ইউপি সদস্যকে ঘুষ দিতে হয়েছে ২ হাজার টাকা। যাতে ছয় মাস অন্তর অন্তর পান ২১ শত টাকা করে। এত সামন্য টাকা দিয়ে তার ব্যায় বহণ করা কষ্টসাধ্য।  

শিশুটির মা চন্দনা রানী দাস বলেন, স্বামী সেলুনে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে চলে আমাদের মোট তিন সন্তান ও শাশুরী নিয়ে মোট ছয় জনের সংসার। মেয়েটি অসুস্থ্য তার চিকিৎসার জন্য সর্বস্ব খুইয়ে ভারত গিয়েও কোন লাভ হয়নি। এখন মেয়েটিকে খাচায় আটকে রেখে আমরা কাজে বের হই। ওর কাছ থেকে সরে গেলে প্রসাব পায়খাণা করে তার মধ্যে গোসল করে ফেলে। এর উপর কিছু বলতে পারে না। রেগে গিয়ে নীজে নীজের শরির কামরে ঘা করে ফেলে।  

আর কালুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, বর্তমান সরকার সকল শ্রেনী পেশার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় শিশুটিকে একটি কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ওই শিশুটির পরিবার আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রশাসন থেকে চিকিৎসা সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা করা হবে।