ভাঙ্গন ঝুকিতে লঞ্চ ও ফেরিঘাট : দৌলতদিয়ায় ফের ভয়াবহ ভাঙ্গন রাজবাড়ী / 
ফের ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটের মধ্যে থাকা মজিদ শেখের পাড়া এলাকায়। পদ্মার ভাঙ্গনের বিলিন হতে বসেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার পুরো একটি গ্রাম। কেবল ওই গ্রামেই নয় প্রমত্তা পদ্মা এবার হানা দিয়েছে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাটেও। ঘাট বাচাতে ও ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করলেও দেরিতে কাজ শুরু ব্যাপারে শ্রমিক সঙ্কটের দোহাই দিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তুুু শেষ রক্ষা হবে কিনা তা না নিয়ে শঙ্কায় আছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখাযায়, শুক্রবারের ভয়াবহ ভাঙ্গনে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে, আবু মেম্বার, সোহেল রানা, মোকছেদ মন্ডলের বসতবাড়ি। এখনও ভাঙ্গন ঝুকিতে পুরো মজিদ শেখের গ্রাম, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাটসহ বহু গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা।
স্থানীয়রা জানায়, প্রমত্তা পদ্মা বারবার হানা চিচ্ছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। গত এক মাসে তিন বারের ভাঙ্গনে বসত হারা হয়েছে অনেকে। সবশেষ শুক্রবার সকালের ভাঙ্গনে মুহুর্তেই নদীগর্ভে বিলিন হয় মজিদ শেখের পাড়ার তিনটি বসতবাড়ী।
এই যেমন চারবার ভেঙ্গেছে ৪৫ বছর বয়সী জিয়াসমিন বেগমের বসতী। এখন শেষ সম্বল যতটুকু আছে সেটুকু বাচিয়ে স্বামী, সন্তান নিয়ে সরকারী সরকে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা তার।
একই অবস্থা ৭২ বছর বয়সী আবুল মন্ডলের পদ্মা পারে বসে নির্ঘুম রাত কাটে তার। বাদ যায়নি ৮ বছর বয়সী শিশু আল আমিনও মাকে সহায়তা করতে জাম গাছটি কেটে নিতে গাছের মগ ডালে উঠেছে শিশুটি।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য বাবু মন্ডল জানান, চলতি মাসের শুরুতে প্রথমবার, মাঝে দ্বিতীয়বার, আর সবশেষ শুক্রবার সকাল ৬ টা থেকে ভাঙ্গন শুরু হয় দৌলতদিয়া ১ নম্বর ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটের মাঝামাঝি এলাকায়। ভাঙ্গনরোধে সামান্য জিও ব্যাগ ফেলা ছাড়া তেমন কোন জোরালো পদক্ষেপ নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা ছাড়া আর কোন উপায় দেখছেন না তারা।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, বার বার বলার পরও আমাদের চিৎকার পৌঁছায় না তাদের কানে। আশ্বাস ছাড়া মেলেনি তেমন কিছুই। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কর্মকর্তা পরিদর্শন করলেও নেয় না তেমন উদ্যোগ। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারনেই আজকের এই ভয়াবহ ভাঙ্গন।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন, ঘাট বাচাতে ও ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। তবে দেরিতে কাজ শুরু করার ব্যাপারে শ্রমিক সঙ্কটের দোহাই দিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রথমে রাজবাড়ীর কোথাও শ্রমিক পাচ্ছিলাম না। পরে জেলা প্রশাসক ও ইউএনও মহদয়কে জানিয়ে দৌলতদিয়া থেকে শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করি। সেই সাথে দৌলতদিয়ায় ভাঙ্গনরোধে একজন কর্মকর্তাকে দেখভালের ও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।