Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মায়ের আত্মহত্যা! মাদারীপুর

ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মায়ের আত্মহত্যা!

মাদারীপুরের কালকিনিতে পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত নয়ন পাল (৩৪) নামে এক ওষুধ ফার্মেসীর কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিকে অতি আদরের বড় ছেলের এ অকাল মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষপানে করে তার বৃদ্ধা মা আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে গুরুতর অসুস্থ্য হয়। শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই কর্মচারী পৌর এলাকার দক্ষিণ রাজদী গ্রামের গৌতম পালের ছেলে। সে উপজেলা সদরের হাওলাদার ওষুধ ফার্মেসীর কর্মচারী ছিলেন।

নিহতের পরিবার ও এলাকা সুত্রে জানাগেছে, নয়ন পাল গত ১৭ দিন আগে সকাল বেলা ফার্মেসীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘড় থেকে বের হন। এসময় ঘরের সামনে একটি কুকুরকে দেখে তিনি তাড়া দেন। এতে করে ওই কুকুরটি ক্ষিপ্ত হয়ে নয়নকে এলোপাথারীভাবে প্রায় ৫/৬ টি কামড় দেয়। এতে করে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে সেখানে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বুধবার সকালে তিনি পুনরায় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে ঢাকার মহাখালীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।

অপরদিকে সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ছেলে নয়ন পালের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে তার বৃদ্ধ মা মেঘনা পাল (৬০) বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন মেঘনা পালকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। আজ শুক্রবার সকালে সেখানে বসে তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ওই একই দিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আরও ১৪ জন আহত হয়েছিল।

নিহত নয়ন পালের প্রতিবেশি মেহেদী হাসান ও দিদার হোসেন বলেন, ছেলে নয়নের মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে তার মা মেঘনা পাল আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবশেষে আজ তার চিকিৎসারত অশস্থায় মৃত্যু হয়েছে। তারা আরো বলেন, নয়নের বাবা ২০ বছর আগে নয়নকে ছোট রেখে মারা গেছে। সে মারা যাওয়ার পরে নয়নই সংসারের হাল ধরের। তার মা তাকে লালন পালন করে বড় করেছিল। এ নিয়ে আমাদের পুরো এলাকায় এখন চলছে শোকের মাতম।

এ ব্যপারে কালকিনি থানার ওসি ইসতিয়াত ইসফাক রাসেল বলেন, পুত্রের মৃত্যুর শোকে মায়ের মৃত্যু বিষয়টি  আসলে খুবই দুঃখজনক।