Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার ১৫ বছরের কষ্টের জীবন! চান প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি মুক্তিবার্তানাটোর

পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার ১৫ বছরের কষ্টের জীবন! চান প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলাধীন ফুলবাড়ী গ্রামের মৃত দবির উদ্দিন মোল্লা’র ছেলে মো: দেলোয়ার হোসেন একজন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা। উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণে স্ট্রোক করে দুই পা অকেজো হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন তিনি। এই পঙ্গু অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা আজ প্রায় ১৫ বছর ধরে কাটাচ্ছেন এক অসহনীয় যন্ত্রণাময় জীবন। 

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহব্বানে মুক্তিযুদ্ধো শুরু হয়। দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করার জন্য কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন দেলোয়ার। তৎকালীন এলাকার বড়ভাই তথা বর্তমান নাটোর জেলা কমান্ড এর সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ: রউফ সরকারের পরামর্শে তৎকালীন জলঙ্গি বর্ডার হয়ে ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষন নেন। প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধকালীন ৭নং সেক্টরে ‘সেক্টর কমান্ডার কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান’ এর অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন তিনি। তার লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-৩০৪০৪০০৯৮, গেজেট নং- ১২০২২  (সেনাবাহিনী), সনদ নং- ১২৯০।  

সাংবাদিকদের সামনে কান্না বিজড়ীত কন্ঠে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিভিষিকাময় স্মৃতিচারন করতে থাকেন। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে আমাদের দেশের সুর্য সন্তানরা পাকিস্থানী বর্বর হানাদারদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় ছিনিয়ে আনে। আমরা পরাধীন থেকে স্বাধীনতা অর্জন করি।
যুদ্ধ শেষে নিজ কমান্ডারের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে ঢাকার পিলখানায় চলে যান তিনি এবং ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহীনিতে যোগদান করেন মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার। সারাজীবন দেশ সেবায় নিজেকে বিলিয়ে ২০০১ সালে চট্রগ্রাম  সেনানিবাস থেকে অবসর গ্রহন করেন তিনি। অবসর গ্রহণের কিছুদিন পরে স্ট্রোক হয়ে আজ সে পঙ্গুত্ব বরণ করে অসহায় জিবন যাপন করছেন। নিজে নিজে চলতে পারেন না তিনি। সারাজীবন ছুটে চলা মানুষটি আজ একই যায়গায় বসে খাওয়া-দাওয়া, নামাজ এবং প্রয়োজনীয় সকল কিছু করতে হয়। এ যেন শেকড় বন্দি জীবন। 

অসহায় পঙ্গু এই মুক্তিযোদ্ধা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক সহযোগীতা কামনা করে বলেন- ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে দেশ স্বাধীন করেছি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য হিসাবে নিজেকে উৎস্বর্গ করেছি, আজ আমার এই অসহায় জীবনের অবসানের জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছি। 

মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার এর সহযোদ্ধা গোপালপুর গ্রামের মো: মাজদার রহমান, ভূঁইয়া পাড়া গ্রামের মো: আ: আজিজ এবং দিয়ারপাড়া গ্রামের মো: লিয়াকত আলী বলেন- দেলোয়ার আমাদের সাথে যুদ্ধ করে এবং যুদ্ধের পরে বাংলাদেশ সেনাবাহীনিতে যোগদান করে, বর্তমানে সে পঙ্গু অবস্থায় আছে। আমরা তার স্বাভাবিক জীবন কামনা করি।

এ বিষয়ে নাটোর জেলা কমান্ড এর সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আঃ রউফ সরকার বলেন- মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার আমার সহ যোদ্ধা ছিলেন। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছি এবং দেশ কে স্বাধীন করেছি। বর্তমানে দেলোয়ার পঙ্গু অবস্থায় অসহায় জীবন যাপন করছে, বিশ্ব মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটু সহযোগীতা করলে অসহায় পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার মৃত্যুর আগে একটি স্বাভাবিক জীবন পেতে পারে।