কোদালের আঘাতে হুইল চেয়ারে বসা বৃদ্ধা খুন কুমিল্লা / 
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলায় বাড়ির বাইরে হুইলচেয়ারে করে ঘুরছিলেন আমির হোসেন (৭৫)। এ সময় বি এম ওসমান গনি নাছিম নামের এক ব্যক্তি পেছন থেকে এসে কোদাল দিয়ে একাধিকবার আঘাত করলে বৃদ্ধ আমির হোসেন মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার ভোরে দাউদকান্দি উপজেলার টামটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে এ ঘটনার ১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। হামলাকারী নাছিম ওই বৃদ্ধের প্রতিবেশী। এ ঘটনায় পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ইলিয়টগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আমির হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের স্বজনরা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পরে পুলিশ সেখান থেকে নিহত আমিরের লাশ উদ্ধার করে। জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমির হোসেন ও প্রতিবেশী ওসমান গনির বিরোধ চলছিল। তারা মামাতো-ফুফাতো ভাই। এ বিরোধ থেকেই খুনের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আমির হোসেন হাঁটতে পারতেন না। তিনি হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করতেন। সকালে তিনি বাড়ির পাশে একা ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় আমিরকে একা পেয়ে তার মামাতো ভাই কোদাল দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপান। আমিরের চিৎকার-চেঁচামেচিতে গ্রামের কিছু লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হন। অবস্থা বেগতিক বুঝে ওসমান গনি এবং তার ভাই ও ছেলেরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাদের বাঁধা দেয়।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে ওসমান গনি (৫২), তার বড় ছেলে মো. সিয়াম (২৭), ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন (৩৫), প্রতিবেশী যুবক শরীফ হোসেন (২৪) ও মো. মহিউদ্দিন (২৫) আহত হন। পরে পুলিশ তাদের দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসা শেষে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে ওসমান গনি ও তাদের পরিবারের লোকজনদের পালাতে বাঁধা দিতে গিয়ে গ্রামের হাবিবুর রহমান (২৯) নামের আরো একজন আহত হন। হাবিবুরকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। আমি খুনির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি মুহম্মদ আলমগীর ভূঞা বলেন, ‘নিহত বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তসহ গ্রামের পাঁচ বাসিন্দাকে থানায় আনা হয়েছে। জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।