Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপিত জাতীয়

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপিত

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপিত হয়েছে। ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। 

১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) তাঁর বজ্র নিনাদ কন্ঠে এক কালোত্তীর্ণ ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে তৎকালীন সাড়ে ৭ কোটি মুক্তিকামী বাঙালির আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে।

জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইতিমধ্যেই বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ভোরে বঙ্গবন্ধু ভবনসহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতির পিতার দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।

পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। 

এ সময় সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ, মাহবুবু-উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং সর্বস্তরের মানুষ সারিবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন।

এ ছাড়াও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতা ও কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনিস্টিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান,কামরুল ইসলাম ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক  ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। 

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে  রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম  মোজাম্মেল হক।

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। 

এদিকে দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ অনুষ্ঠানমালা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। 

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ স্বাগত এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ আলোচকের বক্তব্য রাখেন।

এর আগে সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর এবং তথ্য অধিদফতর আয়োজিত আলোকচিত্র ও বই প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

এদিকে মঙ্গলবার বাদ যোহর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী সকল শহীদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। 

এ সময়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো: ফরিদুল হক খান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহাঃ বশিরুল আলম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব মোঃ মনিরুজ্জামান, পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মোঃ মিজানুর রহমান।  

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ  উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সকল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০ টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিয়োগাযোগ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ৭মার্চ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।