Opu Hasnat

আজ ১৭ এপ্রিল বুধবার ২০২৪,

পার্বত্য কাউখালীতে সাফ জয়ী পাঁচ ফুটবলার,তিন কোচ ও পৃষ্ঠপোষককে সংবর্ধনা খাগড়াছড়ি

পার্বত্য কাউখালীতে সাফ জয়ী পাঁচ ফুটবলার,তিন কোচ ও পৃষ্ঠপোষককে সংবর্ধনা

পার্বত্য কাউখালীতে সাফ জয়ী পাঁচ ফুটবলার, তাঁদের তিনজন কোচ ও পৃষ্ঠপোষককে সংবর্ধিত করা হয়েছে। রাঙামাটির কাউখালীতে মুহুর্মুহু ‘রেঙ’ দিয়ে (এক প্রকার জয়ধ্বনি) আনন্দ-উচ্ছাসে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২ জয়ী বাংলাদেশ দলের সদস্য ঋতুপর্ণা চাকমা, রূপনা চাকমা, আনাই মগিনী, আনুচিং মগিনী ও মনিকা চাকমা এবং তাদের প্রথম পৃষ্ঠপোষক বীরসেন চাকমা, কোচ শান্তিমনি চাকমা ও সুইহ্লামং মারমাকে স্বজাতি ও স্বদেশের মুখ উজ্জ্বল করায় সংবর্ধনা দিয়েছে এলাকাবাসী। 

শুক্রবার (৭ অক্টোর ২০২২) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কাউখালী উপজেলার পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ, পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, ঈরবান ক্লাব ও আগমুলিম ক্লাব অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও ২নং ফটিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উষাতন চাকমা এবং সদস্য সচিব ক্রীড়া সংগঠক সুরেশ কান্তি চাকমার নেতৃত্বে একদল এলাকাবাসী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাস্তা মাথায় (উল্লো ব্রীজ) অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান। এরপর তাঁদের নিয়ে ব্যান্ডের তালে তালে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে পৌঁছান। এ সময় সমবেত শত শত দর্শক জুম্মোদের ঐতিহ্যবাহী জয়ধ্বনি “রেঙ” দিয়ে আনন্দ-উচ্ছাসে তাঁদের স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠান মঞ্চে খেলোয়াড়দের প্রথম পৃষ্ঠপোষক বীরসেন চাকমা, কোচ শান্তিমনি চাকমা, পাহাড়ের পাঁচ কৃতি খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা, রূপনা চাকমা, আনাই মগিনী, আনুচিং মগিনী ও মণিকা চাকমাকে সাত শিশু ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে বরণ করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোচ সুইহ্লামং মারমা উপস্থিত থাকতে পারেননি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ২নং ফটিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উষাতন চাকমা। মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সুনীল কান্তি তালুকদার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কাউখালী শাখার সভাপতি সান্তনা চাকমা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিউটন চাকমা ও অনিল চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবাগত প্রধান শিক্ষক নতুন জয় চাকমা। এতে আরো বক্তব্য রাখেন সুনীল কান্তি তালুকদার, পৃষ্ঠপোষক বীরসেন চাকমা, কোচ শান্তিমনি চাকমা, খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা এবং মনিকা চাকমা।

কোচ শান্তিমনি চাকমা বলেন, “এ ধরনের চমৎকার মহতী অনুষ্ঠান যারা আয়োজন করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সমাজে কারো না কারো এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হয়। বর্তমানে যুব সমাজ ইন্টারনেটে জুয়া ও গেম খেলে উচ্ছন্নে যাচ্ছে। একমাত্র খেলাধুলার মাধ্যমে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে”।

খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, “আপনারা যে আমাদের সংবর্ধনা দিয়েছেন সেজন্য আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এ পর্যায়ে আসতে আমাদের অনেক পরিশ্রম ও ত্যাগ তিতিক্ষা স্বীকার করতে হয়েছে। কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলা আমরা মেনে চলেছি। সবাই একতাবদ্ধভাবে পরিশ্রম করেছি বলেই সফল হয়েছি”।

খেলোয়াড় মনিকা চাকমা বলেন, ‘‘আপনারা আমাদের যেভাবে সংবর্ধিত করেছেন তা আজীবন মনে থাকবে। ভবিষ্যতে আমরা যাতে আরো ভালো করতে পারি সে আশীর্বাদ কামনা করছি”।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক্রীড়াঙ্গনে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান ও কৃতি ফুটবল খেলোয়াড় গড়তে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বীরসেন চাকমার হাতে সম্মাননা স্মারক ও নগদ অর্থ (প্রতীক সম্মানী) তুলে দেন সংবর্ধনা আয়োজক কমিটির সদস্য এবং ঘাগড়া ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মুনিন্দ্র তালুকদার। আর ক্রীড়াঙ্গনে অবদান ও আন্তর্জাতিক মানের কৃতি ফুটবলার গড়তে মৌলিক ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ শান্তিমনি চাকমার হাতে সম্মাননা স্মারক ও নগদ অর্থ(প্রতীক সম্মানী) তুলে দেন ২নং ফটিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান উষাতন চাকমা। ফুটবল খেলার মাধ্যমে স্বজাতি ও স্বদেশের মুখ উজ্জ্বল করায় পাঁচ খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, আনুচিং মগিনী, আনাই মগিনী ও রূপনা চাকমার হাতে সম্মাননা স্মারক ও নগদ অর্থ(প্রতীক সম্মানী) তুলে দেন যথাক্রমে ৯৭নং মুবাছড়ি মৌজার হেডম্যান কালি রতন চাকমা, পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অনিল বিকাশ চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ কাউখালী শাখার সভাপতি সান্তনা চাকমা, ক্রীড়া সংগঠক সুরেশ কান্তি চাকমা এবং ঘাগড়া ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার শশী রঞ্জন চাকমা।