Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

চরভদ্রাসনে স্কুলের জমি দখলে সাইনবোর্ড! ফরিদপুর

চরভদ্রাসনে স্কুলের জমি দখলে সাইনবোর্ড!

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপার নেতৃত্বে গত ২৬ জুলাই দিনভর চরহাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গড়া প্রায় ৪০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ফলে বিদ্যালয়টি ফিরে পেয়েছে ৫৩ শতাংশ জায়গা জুড়ে খেলার মাঠ সহ শহীদ মিনার। কিন্ত এ উচ্ছেদ অভিযানের টের পেয়ে মাত্র তিনদিন আগে উক্ত বিদ্যালয় মাঠের পশ্চিম সীমানায় চরহাজীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন প্রধান সড়ক ঘেষে স্কুলের জমিতে গড়া ‘গাজীরটেক অটোরিক্সা সমবায় সমিতি লিঃ’ নামক অফিস কক্ষের গায়ে একটি মহল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কার্যালয় উল্লেখ করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে রাখেন। বিষয়টি বিভ্রান্তিকর মনে করে উক্ত স্থাপনাটি উচ্ছেদের ব্যাপারে একটু সময় নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এদিকে গত ক’দিন ধরে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চরহাজীগঞ্জ বাজার এলাকার বিভিন্ন মহলের মধ্যে উক্ত স্থাপনাটি নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।

জানা যায়, গত ২৭ জুলাই উপজেলায় অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভার প্রধান অতিথি ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন) উক্ত স্থাপনাটির ব্যপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সুষ্ঠ তদন্ত মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দিয়েছেন। 

এ ব্যাপারে ওই সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, “পাঁচ দফা নোটিশ দেওয়ার পরও বিদ্যালয় জায়গার ঘরগুলো সরানো হয় নাই। অভিযানের মাত্র তিনদিন আগে স্থানীয় একটি মহল স্থাপনার গায়ে ‘৪ নং গাজীরটেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কার্যালয়’ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে স্থাপনাটি উচ্ছেদ মুক্ত রাখতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে”। 

শুক্রবার, সরেজমিনে বিদ্যালয় মাঠ ঘুরে জানা যায়, প্রায় সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিদ্যালয় মাঠ ও শহীদ মিনার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র মাঠের পশ্চিম সীমানায় পাকা সড়ক পাশ দিয়ে তিনটি দোকান ঘরের সংলগ্ন গাজীরটেক ইউনিয়ন আ’লীগ কার্যালয় সাইনবোর্ড সম্বিলিত স্থাপনা পড়ে রয়েছে। ওই তিন দোকান ঘর মালিক ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ন আহবায়ক আহসানুল হক মামুন জানায়, “সাইনবোর্ড সম্বিলিত ঘরটি দীর্ঘকাল ধরে আ’লীগের অফিস ছিল। উক্ত ঘরে বসেই স্থানীয় আ’লীগের সমস্ত মিটিং সিটিং পরিচালনা করা হয়েছে। আর অনেক বছর আগে তিনি সাবেক স্কুল ম্যানেজিং কমিটির কাছ থেকে জমি লীজ নিয়ে উক্ত তিনটি দোকান ঘর নির্মান করেছেন বলেও জানান”। 

চরহাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাদ আবুল কালাম বলেন, “বিগত দিনে আ’লীগের নেতৃস্থানীয়রা এলাকায় এসে ওই ঘরে বসে মিটিং সিটিং করছেন এটা সত্য, তাই বলেতো ঘরটা আওয়ামীলীগের অফিস নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এলাকায় এসে বিভিন্ন স্কুল মাঠে জনসভা করে থাকেন, তাতে করে মাঠটি কোনো দলের হয় না। আর স্কুলের জমি লীজ প্রদানের বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান”।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে উপজেলার চরহাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়টি ২ একর ৪৬ শতাংশ জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০০১ সালে পদ্মা নদীর ভাঙনের অনেকাংশ বিলীন হয়। পরে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হলে দখলদাররা একের পর এক দোকান ঘর উঠিয়ে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ সহ শহীদ মিনার গ্রাস করে রেখেছিল। দীর্ঘ্য ২০ বছর পর বিদ্যালয়ের জমিগুলো দখলমুক্ত হলো।