আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৯৫০ আন্তর্জাতিক / 
আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ছয় শতাধিক। বুধবার (২২ জুন) ভোররাতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে এ ভূকম্পন আঘাত হানে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (২২ জুন) ভোররাতে মানুষজন ঘুমিয়ে থাকার সময় আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে আঘাত হানে প্রবল এই ভূমিকম্প। পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের ন্যাশনাল সিসমিক মনিটরিং সেন্টার এবং ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ইএমএসসি) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) অবশ্য ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৯ রেকর্ড করেছে।
ইএমএসসি জানিয়েছে, প্রায় ৫০০ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এই ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে। এতে আফগানিস্তানের পাশাপাশি কেঁপে ওঠে প্রতিবেশী পাকিস্তান এবং ভারতও। ভোররাতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানায় সেসময় ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধসে পড়া বাড়িঘরের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান অনেকে।
আফগানিস্তান খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে দেশটিতে ভূমিকম্পে সাত হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ভূমিকম্পে প্রতি বছর আফগানিস্তানে গড়ে ৫৬০ জন মারা যান।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী শরাফুদ্দিন মুসলিম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অন্তত ৯৫০ জন নিহত এবং ৬০০ জন আহত হয়েছেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, পাকতিকা প্রদেশে মাটির তৈরি বাড়িগুলি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। আহতদের উদ্ধারে তৎপর থাকতে দেখা গেছে উদ্ধারকারীদের। প্রত্যন্ত অঞ্চলে, হেলিকপ্টার দিয়ে হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
স্থানীয় একজন চিকিৎসক বিবিসিকে জানান, বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে প্রদেশটির গায়ান ও বারমাল জেলায়। স্থানীয় মিডিয়া সাইট ইতিলাত-ই রোজ জানিয়েছে, গায়ানের একটি গ্রাম ভূমিকম্পে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল করিমি এক টুইট বার্তায় লেখেন, দুর্ভাগ্যবশত, গতরাতে পাকতিকা প্রদেশের ৪টি জেলায় একটি প্রবল ভূমিকম্প হয়েছে, যার ফলে আমাদের শতাধিক দেশবাসী নিহত ও আহত হয়েছে এবং বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। আমরা আরও বিপর্যয় এড়াতে অবিলম্বে এসব এলাকায় দল পাঠানোর জন্য সব সাহায্য সংস্থাকে অনুরোধ করছি।
তিনি আরো বলেন, ‘বিপর্যয় এড়াতে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোতে প্রতিনিধি পাঠাতে প্রতিটি সাহায্যকারী সংস্থাকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে সাত হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসলামাবাদ, মুলতান, ভাক্কর, ফলিয়ে, পেশোয়ার, মালাকান্দ, সোয়াট, মিয়ানওয়ালি, পাকপত্তন, বুনেরসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এতে পাকিস্তানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।