Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

সিংগাইর আঞ্চলিক মহাসড়কে ইজিবাইক নিষিদ্ধ করায় চালকেরা বিপাকে! মানিকগঞ্জ

সিংগাইর আঞ্চলিক মহাসড়কে ইজিবাইক নিষিদ্ধ করায় চালকেরা বিপাকে!

সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে হেমায়েতপুর- সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সে লক্ষে সড়কটিতে প্রতিদিনই চলছে পুলিশের অভিযান ও যানবাহন আটক। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ। এ ছাড়া কর্মহীন হয়ে পড়া চালকেরা পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে থানা পুলিশ আঞ্চলিক মহাসড়কটিতে ইজিবাইক চলাচল বন্ধে কঠোর অবস্থান নেন। এরপর থেকে সড়কে ইজিবাইক দেখলেই তা জব্দ করছেন। ফলে স্বল্প পুঁজির চালকেরা তাদের জীবিকার উৎসের শেষ সম্বল গাড়িটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে,  সড়কটিতে "শুকতারা" নামে একটি মাত্র বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। তাও আবার নিয়ন্ত্রণ করছে প্রভাবশালী একটি মহল। ইতিপূর্বে যান জাবিল ও বসন্ত পরিবহন নামে দু‘টি বাস সার্ভিস চালু হলেও শুকতারা বাস মালিক সমিতির সিন্ডিকেটের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, এখনো পর্যন্ত সড়কের যাত্রী সাধারণ ওই শুকতারা সার্ভিসের কাছেই জিম্মি হয়ে আছেন।

গেল দুই বছর আগে সড়কটি যথাযথ প্রশস্তকরণের পর পরিবহনের চাপ বেড়ে যায় দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া যানজটমুক্ত ও দূরত্ব কম হওয়ায় দক্ষিণ ও পশ্চিম বঙ্গের আন্তঃজেলা ভারী পরিবহনগুলো সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে এ সড়কটি ব্যবহার করে আসছে। এর পর থেকে সড়কটিতে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ এবং শুকতারা সার্ভিসের কাছে জিম্মি দশা থেকে রক্ষা পেতে ইজিবাইকের চাহিদা ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। ফলে দ্রুত বাড়তে থাকে এ ধরনের তিনচাকা চালিত যানবাহনের সংখ্যা।

বিভিন্ন ইজিবাইক চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিংগাইরের প্রধান সড়কসহ অন্যান্য সড়কে প্রায় ৩ হাজারের ওপরে ইজিবাইক রয়েছে যার বেশির ভাগই আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করে। ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করায় তাদের এখন পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে চালকরা ১১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের কাছে তাদের ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দানের দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি না মানলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দিবেন বলেও জানান তারা।

ইজিবাইক চালক মো. রিপন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, শুকতারা বাস মালিক সমিতির যোগসাজশে আমাদের ইজিবাইক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে যথাযথ নিয়ম মেনেই আমরা এ সড়কে ইজিবাইক চালাতে চাই।

এ সড়কে চলাচলকারী একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইজিবাইকের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে ঠিক কিন্তু যাত্রীদের চলাচলের ভোগান্তি অনেকাংশেই লাঘব হয়েছে। তারা আরও বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে ইজিবাইক বন্ধের আগে বেপরোয়া গতিতে চলাচলকারী ইটবাহী ট্রাক ও দূর পাল্লার নিষিদ্ধ পরিবহন আগে বন্ধ হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে একাধিক বাস সার্ভিস চালু করাও জরুরি। এছাড়া ইজিবাইক চালকদের বিকল্পকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান স্থানীয় সুশীল সমাজ।

এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সিংগাইর সার্কেল) মোহা. রেজাউল হক জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কে দূর্ঘটনা রোধকল্পে যানবাহনগুলো চলাচলে নিষেধ করলেও তা না মানায় কঠোর অভিযান পরিচালনা করছি এবং নির্দেশ অমান্যকারী গাড়ী জব্দ করেছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।