জমে উঠেছে দামুড়হুদার কৃষকদের পণ্য ও সংগ্রহ বিপনন কেন্দ্র কৃষি সংবাদ /  চুয়াডাঙ্গা / 
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের জয়রামপুর কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কেন্দ্রর কায্যক্রম জমে উঠেছে। প্রতিদিন এলাকার উৎপাদিত হাজার হাজার মণ সবজি যাচ্ছে ঢাকা,খুলনা,চিটাগাংসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা। কেন্দ্রটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে একজন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও একজন মার্কেটিং ফেসিলেটাটর বদরুল আলম।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে দামুড়হুদা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সংগ্রহ ও বিপণনের সুবিধার্থে জয়রামপুর ও পারকৃষ্নপুর-মদনায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে কৃষি অধিদপ্তরের দ্বিতীয় শষ্য বহুমুখীকরণ প্রকল্প কর্তৃক দুটি কৃষি পণ্য সংগ্রহ বিপণন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ওই সময় এলাকার কৃষকরা সমিতির মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য বেগুন, লাউ, চিচিংগা, পেপে, কলা, কুমড়া, পিয়ারা, কুল, কাঁঠাল, ড্রাগন, মালটাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো শুরু করে। তারা ভালো লাভবান হচ্ছিলেন। দুই বছর চলার পর দুটি কেন্দ্রই বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তিতে জয়রামপুরের কেন্দ্রটি চালু হলেও বন্ধ রয়েছে পারকৃষ্ণপুর-মদনা। পারকৃষ্ণপুর-মদনা এলাকায় সবজি আবাদ কম হওয়ায় শুধুমাত্র আমের সময় কেন্দ্রটি কার্যক্রম চলে। এখান থেকে আম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়ে থাকে।তবে জয়রামপুর বিপনন কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৭/৮ ট্রাক মালামাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানে হচ্ছে। এতে করে চাষিরা ভালো লাভবান হচ্ছেন। তারা পাচ্ছেন বিক্রিত পণ্যের সঠিক মূল্য।
দামুড়হুদার জয়রামপুর গ্রামের সবজি চাষি আব্দুল হান্নান, আক্কাছ আলি ও শাহানানেওয়াজ বলেন, কেন্দ্রটি চালু হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। পণ্য এখানে নিয়ে আসলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন। এছাড়াও এসব পণ্য নিজেরাই সমিতির মাধ্যমে ট্রাকবোঝাই করে নিজেরা না গিয়েও সরাসরি ঢাকা, খুলনা ও চিটাগাংয়ের নিজেদের পছন্দের আড়তে পাঠাতে পারছি। সেখানে বেচাবিক্রি শেষে ঘরে বসে বিক্রিত মালের টাকা বিকাশের মাধ্যমে অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছি। যাতে আমাদের সময় কম ব্যয় হচ্ছে, তেমনি ঘরে বসে সঠিক মূল্য পাচ্ছি।উদ্যোক্তা শাহানেওয়াজ ও আব্দুল হালিম বলেন, এলাকার কৃষকরা আমাদের মাধ্যমে তাদের মালামাল এনে এখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন। আমরা ঢাকা, খুলনা ও চিটাগাংসহ বিভিন্ন আড়তের সাথে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছি। তারা স্থানীয় বাজার ছাড়াও বাইরে বেশি মূল্যে মালামাল বিক্রি করতে পেরে ভালো লাভবান হচ্ছেন। আমাদের এখানে জায়গা কম হওয়ায় মহাসড়কের পাশে ট্রাক লোড করতে এতে সব সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান জানান, দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনার কেন্দ্রটি এলাকায় সবজির চাষ না থাকায় শুধুমাত্র আম বাজারজাত করার সময় কেন্দটি সরগরম থাকে। তবে বর্তমান প্রকল্পটি নাম পরিবর্তন নিরাপদ উদ্যান তাত্তি¡ক ফসল উৎপাদন ও সংগ্রহত্তোর প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পটি জয়রামপুর খুব ভালোভাবে চলছে। এলাকার কৃষকরা উৎপাদিত সবজি ও ফল ঘরে বসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে ঘরে বসে বিকাশ অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তাদের টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। তবে ঢাকা চিটাগাং মালামাল পাঠাতে তাদেরকে ফেরি পারাপারে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ফেরি পারাপারের সময় নিশ্চিত হলে কৃষকরা আরো বেশি লাভবান হতো এবং এতে তাদের আরো আগ্রহ বাড়তো।