Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

ঝালকাঠিতে লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে পুলিশ ঝালকাঠি

ঝালকাঠিতে লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে পুলিশ

ঝালকাঠি জেলা পুলিশ লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে । সড়ক আর দোকানপাটে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চালিয়ে যাচ্ছে প্রচার-প্রচারণা। মঙ্গলবার দুপুরে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে ঝালকাঠি জেলা পুলিশ জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রচারনায় নামে। 

এসময় পথচারীদের মাস্কপড়া, অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়াসহ বিভিন্ন রকম সচতেনতায় প্রচারণা চালায়। এছাড়া দোকানপাট বন্ধ রাখতে কঠোর হুশিয়ারী করেন পুলিশ সুপার। ঝালকাঠি পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন বলেন,‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে  সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। 

নলছিটিতে পুলিশের মাস্ক বিতরণ : ঝালকাঠির নলছিটিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ও জনসাধারণকে সচেতন করতে মাস্ক বিতরণ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে নলছিটি থানার ওসি আতাউর রহমানের নেতৃত্বে মাস্ক বিতরণ ও জনসাধারণের মধ্যে  সচেতনতা কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় নলছিটি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ হাসান প্রিন্স, এসআই মফিজ, এসআই জসিমসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।        

নলছিটি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। ডিআইজি ও এসপি স্যারের নির্দেশনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতা করা হয়েছে । রাস্তায় সাধারণ মানুষ যারা মাস্ক পরেনি তাদেরকে মাস্ক বিতরণ করা হয় এবং মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

রাজাপুরে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাঠে প্রশাসন : জেলার রাজাপুরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হুহু করে বেড়েই চলেছে। সোমবারে সর্বোচ্চ শনাক্ত ১৭ জনকে ছাড়িয়ে নতুন করে মঙ্গলবার (২৯ জুন) একদিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এ দিকে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের বিধিনিষেধ চলাকালীন গত দিনগুলোর অভিজ্ঞতায় মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে সচেতনতা সৃষ্টিতে মাঠে নেমেছে। করোনার প্রাদুর্ভাব দিন দিন বাড়তে থাকার পরও করোনা সচেতনতায় সাধারণ মানুষ অনেকটাই অসচেতনভাবে ঘোরাফেরা ও কেনাকাটা করছে। করোনা আক্রান্তের হার বাড়লেও মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মানার ও মুখে মাস্ক ব্যবহারের কোন বালাই নেই খোদ উপজেলা শহরেই। মানুষজন মাস্ক ছাড়াই বাজার ঘাটে চলাচল করছে, প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই।

রাজাপুরে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১৭ জনে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সদস্য, সংবাদ কর্মী ও চিকিৎসক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৪ বেডের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি আছে ৭ জন। বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০০ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ সামলাতে ১২ বেডের আর একটি করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রেখেছেন। আর এ কারণে উপজেলার সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্বাস্থ্য কর্মী জানান, প‚র্বে রাজাপুরে করোনা সংক্রমণের হার অনেক কম ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে হঠাৎ করে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। আমাদের হাসপাতালের আউটডোর ও জরুরি বিভাগে এখন প্রায়ই করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেল বলেন, “করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ার কারণে আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ বেডের নতুন আর একটি করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রেখেছি। শতাধিক রোগী নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কারও সংক্রমণের কারণে অসুস্থতা বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ সামান্য আয়োজন।”

প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২০ জন। এ পর্যন্ত  মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৩১জন।