Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

চার জেলায় ‘গোলাগুলিতে’ নিহত ৫ সারাবাংলা

চার জেলায় ‘গোলাগুলিতে’ নিহত ৫

চার জেলায় বুধবার ভোর ও মঙ্গলবার রাতে গোলাগুলিতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সিলেট ও মুন্সীগঞ্জে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফে দু’জনের এবং খুলনায় একজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা সবাই বিভিন্ন মামলার আসামি বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কক্সবাজার
কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভে ইয়াবার চালান খালাসকে কেন্দ্র করে দু’দল ইয়াবা ব্যবসায়ীর গোলাগুলির ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন।

বুধবার ভোরে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৪টি এলজি, ৯ রাউন্ড গুলি ও ১০ হাজার ১৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন, সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে নজির আহমদ ওরফে ডাকাত নজির (৩৮) ও হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা নয়াপাড়ার আমির হামজার ছেলে আবদুল আমিন। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও মাদকসহ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

সিলেট
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ মিয়া নিহত হয়েছেন।

বুধবার ভোরে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার শ্রীরামপুর বাইপাস এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধে ঘটনা ঘটে বলে দাবি করে র‌্যাব।

র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. মনিরুজ্জামান জানান, নিহত মো. শহিদুল (৪২) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তিনি দক্ষিণ সুরমা থানার তেলিবাজার আহম্মদপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে।

র‌্যাব জানায়, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালায় র‌্যাব-৯ এর একটি বিশেষ দল।এ সময় মাদক ব্যাবসায়ীরা র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালালে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী শহিদুল গুলিবিদ্ধ হন।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৮ মামলার আসামি আবুল হোসেন শেখ (৪৭) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় র‌্যাবের ২ সদস্য আহত হয়েছেন।

বুধবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে টঙ্গিবাড়ি উপজেলার পূর্ব সোনারং গ্রামের বেলবাড়ি এলাকার আলম শেখের বালুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, ১টি ম্যাগজিন, ৫০০ পিস ইয়াবা, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত আবুল উপজেলার কুন্ডের বাজার এলাকার মৃত নাজিমুদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক মেজর আশিক বিল্লাহ জানান, ভোরের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করতে টঙ্গিবাড়ি সোনারং যায়। সোনারং মেইন রোডের পাশে আবুল হোসেন তার ৪-৫ জন সদস্য নিয়ে মিটিং করছিল। পরবর্তীতে তারা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়লে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে আবুল হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় টঙ্গিবাড়ি স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

খুলনা
খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও হত্যা, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামি মিরাজুল ইসলাম ওরফে মারুফ হোসেন ওরফে গরু মারুফকে (৪৩) গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর দৌলতপুরের কার্তিককূল বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ১টি পাইপগান, ১ রাউন্ড গুলি ও ৫৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।

নিহত মারুফ দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের আব্দুল গফ্ফার শেখের ছেলে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে পলাতক ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোস্তাক আহমেদ বলেন, কে বা কারা গরু মারুফকে গুলি করে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পড়ে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে মরদেহ সনাক্ত করেন। তার বিরুদ্ধে দৌলতপুর ও দিঘলিয়া থানায় সেনহাটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম ও হুজি শহীদসহ একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, গরু মারুফ মোটরসাইকেল নিয়ে দৌলতপুর বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় এলে পুলিশ তাকে চ্যালেঞ্জ করে। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করলে সে পড়ে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। পরে পুলিশ তাকে চোখ বেঁধে আটক করে নিয়ে যায়।

তবে এ বিষয়ে একাধিকবার দৌলতপুর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে কেউ মুখ খোলেননি।