Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

স্বাক্ষর জ্বাল করায় ভুমি কর্মকর্তা বরখাস্ত কুমিল্লা

স্বাক্ষর জ্বাল করায় ভুমি কর্মকর্তা বরখাস্ত

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার চান্দেরচর ইউনিয়নের সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে নামজারি খতিয়ান তৈরী ও বিতরনের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় এবং তার কর্মকান্ড সরকারী চাকুরী বিধিমালার পরিপন্থি হওয়ায় তাকে  চাকুরী থেকে বরখাস্ত করেছেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, স্মারক  ২১৯২ তারিখ ১৪-৬-১৫।

চান্দেরচর ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তার দূর্নীতি -কেলেংকারী নিয়ে গত ১৩ মে তারিখে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান চান্দেরচর ভুমি অফিসে যোগদানের পর থেকেই নানা বির্তকিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে। সে একশ্রেণীর সুবিধাভোগী দালাল সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে সাধারন জনগনকে জিম্মি করে ভূয়া নামজারি খতিয়ান দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।  

গত ১১ মে রামকৃষ্ণপুর মৌজার ১১১৩ নং দাগে অবস্থিত নুর মসজিদের ২৫ শতাংশর জমি  ঐ গ্রামের দুলালচন্দ্র ঘোষ  ভুয়া খারিজ খতিয়ান  নিয়ে  জমি বিক্রি করতে আসলে ভূয়া খারিজের বিষয়টি ইউএনও’র  নজরে আসে। খারিজের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে ইউএনও তার এবং নাজিরের স্বাক্ষর জাল হয়েছে নিশ্চিত হয়ে দলিলটি সম্পাদনা না করতে সাব রেজিস্ট্রিারকে নির্দেশ দেন।

পরে ইউএনও’ আহমেদ জামিল তার স্বাক্ষর জাল করে নামজারি খতিয়ান সৃজন ও বিতরনে জড়িত থাকার অভিযোগে চান্দেরচর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী  কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেন, স্মারক নং-২৪০।

সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দূর্নীতিবাজ মোস্তাফিজ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী দালাল চক্রের মাধ্যমে এ অফিসকে দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত করে রেখেছিল।

আখন্দ পাড়া গ্রামের রেনু মিয়া বলেন, একটি খারিজের জন্য আমি ও আমার আত্মীয় হাবিব ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত  হয়রানি হয়েছি। খারিজ পাইনি টাকাও পাইনি। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কাউসার মিয়া ও হাবিবুর রহমান বলেন, জমির খাজনার রশিদ আনতে গেলে ২ টাকা রসিদ দিয়ে আমাদের  নিকট থেকে ২ হাজার থেকে আড়াই  হাজার টাকা করে নিয়েছে মোস্তাফিজ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  রামকৃষ্ণপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, মোস্তাফিজ স্থানীয়  নেশাখোরদের নিয়ে অফিসে বসে নেশা করতো । তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তার সহযোগীরা লোকজনকে শারীরিক ভাকে লাঞ্ছিত করতো। এর প্রতিবাদ করায় অফিস সহকারী মাইন উদ্দিনকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। মাইনউদ্দিন উপজেলা ভূমি অফিসে ডেপুটেশনে রয়েছে।

ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান বলেন অফিসের কাজে আমাকে  প্রায়ই উপজেলায়  থাকতে হয়। এ সুযোগে মোস্তাফিজ অফিসের দায়িত্ব পালন করে । অনেক সময় আমাকে  পর্যন্ত কাজে বাধা দিত । আমার বিরুদ্ধে জনগনের কোন অভিযোগ নাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ জামিল বলেন, সহকারী  ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় প্রতিবেদন দিয়েছি। এবং সে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে । এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে ।